• বুধবার ০১ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৮ ১৪৩১

  • || ২১ শাওয়াল ১৪৪৫

তেতুলিয়ার ইতিহাস

প্রকাশিত: ৪ ডিসেম্বর ২০১৮  

পঞ্চগড় জেলার তেতুলিয়া উপজেলা ইংরেজী ১৮৬০ সন হতে ১৮৬৯ সন পর্যন্ত রংপুর জেলার একটি মহুকুমা হিসেবে প্রশাসনিক ইউনিটের মর্যাদা লাভ করে। শিল্প, বাণিজ্য ও নদী বন্দর হিসেবে তেতুলিয়া ছিল সুবিখ্যাত। মারওয়ারিদের এখানে ছিল একটি প্রধান ব্যবসা কেন্দ্র। মহানন্দা নদী দিয়ে আসা যাওয়া করত মহাজনী নৌকা। এখানে বাণিজ্য মেলা বসত।  এ সময়ে তেতুলিয়া শহরের গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়। তেতুলিয়াতে গড়ে উঠে বিশ কিছু চমৎকার পাকা বাড়ী, মন্দির ও একটি ঘোড় দৌড়ের মাঠ। একই সময়ে ম্যালেরিয়া এবং কালা জ্বরে এখানে ব্যাপক প্রাণহানী ঘটে ফলে শহর হিসেবে গড়ে উঠা তেতুলিয়া বন্দর নগরটি হয়ে পরে অস্বাস্থ্যকর এবং জনশুন্য। অবশেষে ১৮৭০ সনে ১ এপ্রিল তারিখে এক গেজেট নোটিফিকেশন এর মাধ্যমে তেতুলিয়া মহুকুমার সকল ক্ষমতা বিলুপ্ত করে চুড়ান্তভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয় জলপাইগুড়ি জেলার কালেক্টরের হাতে। এর ফলে বিলুপ্ত হয় তেতুলিয়ার প্রশাসনিক ক্ষমতা । ১৯১৩ সনে তেতুলিয়া পূনরায় স্থাপিত হয় একটি পুর্নাঙ্গ পুলিশ স্টেশন।  এর পর থেকে ১৯৪৭ সনে ভারত বিভাগের সময় পর্যন্ত  এটি ছিল জলপাইগুড়ি জেলার অবিচ্ছিন্ন গুরত্বপুর্ন অংশ । ১৯৪৭ সনের ১৮ আগস্ট স্যার রেডক্লিপ ভারতের জলপাইগুড়ি জেলার অন্য ৪ টি থানার সংগে তেতুলিয়াকে  পূর্ব পাকিস্তানের দিনাজপুরের সাথে যুক্ত করে দেন ।

‘‘তেতুলিয়া’’ চার অক্ষরে একটি নাম যা দেশের সকলের নিকট এক নামে পরিচিত। জনশ্রুতি আছে যে, প্রাচীন কালে এ এলাকায় প্রচুর তেতুল বৃক্ষ ছিল। তেতুল গাছের ছায়ায় বসে পথিকেরা বিশ্রাম নিত। এক সময়ে এখানে একজন বিশিষ্ট ইংরেজ বনিক বাস করত। তার বাবার নাম ছিল টিটু এবং তার বাসগৃহ ছিল একটি উঁচু টিলার উপর। সেখানে একটি তেতুল গাছ ছিল। কালক্রমে সেই ইংরেজ বনিকের বাবার নাম ‘‘টেটু’’ এবং তেঁতুল তলা হতে ‘‘লিয়া’’ এ দু’শব্দের সমন্বয়ে এ জনপদের নামকরন হয় ‘‘তেতুলিয়া’’।

তেতুলিয়া বাংলাদেশের সর্ব উত্তরের উপজেলা। এ উপজেলার তিন দিকে ভারত   শুধু মাত্র দক্ষিন দিকে পঞ্চগড় সদর উপজেলা। এ উপজেলা প্রায় ২৬২৪’ ও ২৬৩৮’উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮২০’ ও ৮৮৩২’ পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –