• সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

  • || ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

দেবীগঞ্জে সরিষার বাম্পার ফলন 

প্রকাশিত: ১৮ জানুয়ারি ২০২৪  

দেবীগঞ্জে সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে। অন্যান্য ফসলের তুলনায় সরিষার উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় এবং গত কয়েক বছর ধরে বাজারে সরিষার ভালো দাম থাকায় দিন দিন সরিষা চাষের দিকে ঝুঁকছেন কৃষকরা।

বৃহস্পতিবার (১৮জানুয়ারি) সরজমিনে দেবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ফসলি মাঠ ঘুরে দেখা যায়, সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে ফসলের মাঠ।সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে উঠেছে গোটা মাঠ। আশানুরূপ ফলন ঘরে তুলতে শেষ সময়ে সরিষা ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন এলাকার সরিষা চাষিরা।

দেবীগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ মৌসুমে দেবীগঞ্জ উপজেলার অন্তর্ভুক্ত দশ ইউনিয়ন এবং এক পৌরসভায় মোট ৫ হাজার ৩৩০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। গত মৌসুমের তুলনায় ১হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে এবছর অধিক সরিষার চাষ হয়েছে।

এছাড়া, সরিষার উৎপাদন বাড়াতে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ২হাজার ১৬০ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষির মাঝে প্রণোদনা হিসেবে বিনামূল্যে উন্নত জাতের সরিষার বীজ, সার বিতরণ করা হয়।

সরিষা চাষীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং রোগবালাইয়ের উপদ্রব কম হলে এক বিঘা জমিতে ৭ থেকে ৮ মন সরিষা উৎপাদিত হয়। বাজারভেদে প্রতি মন কাঁচা সরিষা ২ হাজার থেকে শুরু করে ২ হাজার ১০০ টাকা এবং শুকনো সরিষা ৩ হাজার থেকে শুরু করে ৩ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। শ্রমিক খরচ তেমন নেই বললেই চলে। গত কয়েক বছর থেকে সরিষার দাম ভালো হওয়ায় চাষযোগ্য জমির পাশাপাশি পতিত জমিতেও বেড়েছে সরিষা চাষের পরিমাণ।

উপজেলার দণ্ডপাল ইউনিয়নের প্রধানাবাদ গ্ৰামের শামসুল আলম নামের এক চাষী বলেন, ‘গত বছর কৃষি অফিসের প্রণোদনার বারি-১৪ জাতের সরিষা আবাদ করি। ৭ মন শুকনো সরিষা ২২ হাজার টাকার বিক্রি করেছি। খরচ কম এবং লাভ বেশি হওয়ায় এবার দেড় বিঘা জমিতে বারি-১৭ জাতের সরিষা লাগিয়েছি। আশা করছি এবারও ভালো দাম পাব।’

সুন্দরদীঘি ইউনিয়নের আলিয়ারখা গ্ৰামের মো. ইসমাইল হোসেন নামের আরেক চাষী বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরে সরিষার আবাদ করতেছি। গত বছর এক বিঘা জমিতে ৮ মন সরিষা হয়। কাঁচা অবস্থায় খেত থেকে ১৭ হাজার টাকায় বিক্রি করি। সরকারি প্রণোদনার বীজ ও সার পাওয়ায় সর্বসাকূল্যে ৫ হাজার টাকা খরচ হয়। সরিষাতে ধানের থেকেও লাভ বেশি, তাই এবছরও সরিষার আবাদ করেছি।’

এদিকে রোগবালাই ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে প্রণোদনার বীজ ও সার বিতরণের মাধ্যমে সরিষার উৎপাদন বৃদ্ধিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। যার ফলশ্রুতিতে দেবীগঞ্জ উপজেলায় এবছর লক্ষ্যমাত্রার অধিক জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে।

দেবীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. নাঈম মোর্শেদ বলেন, ‘গতবছরের তুলনায় এ বছর উপজেলায় ১হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে বেশি সরিষার চাষ হয়েছে। ফলস্বরূপ, সরিষা আবাদের যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল তা  ছড়িয়ে গেছে। এখানকার সরিষা থেকে তেলের পাশাপাশি মধু উৎপাদিত হচ্ছে, যা স্থানীয় পর্যায়ে ভোজ্য তেল ও মধুর চাহিদা পূরণ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –