• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন: আলোর পথে যাত্রা

প্রকাশিত: ১০ জানুয়ারি ২০২৩  

ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম

আজ ঐতিহাসিক ১০ জানুয়ারি, স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি পাকিস্তানে কারাবাস শেষে বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে আসেন। বঙ্গবন্ধুর এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে আখ্যায়িত করা হয় 'অন্ধকার হতে আলোর পথে যাত্রা' হিসেবে।

পাকিস্তানের কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধুর মুক্তিলাভ ইতিহাসের দৃষ্টিতে খুব একটা সহজ সরলীকরণ বিষয় ছিল না। তার মুক্তির পেছনে মুজিব নগর সরকার এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে সর্বোচ্চ পর্যায়ের কূটনীতি অবলম্বন করতে হয়েছে। ভারতের তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ১৯৭১ সালের ১৫ আগস্ট তারিখে বিশ্বের রাষ্ট্রপ্রধানদের নিকট একটি টেলিগ্রাম পাঠান। অত্যন্ত গোপন এই টেলিগ্রামবার্তায় ইন্দিরা গান্ধী বিশ্বের রাষ্ট্র প্রধানদের জানান ইয়াহিয়া খান বিচারের নামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রাণদণ্ডের অজুহাত তুলছেন। উপমহাদেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতার বৃহত্তর স্বার্থে এ ব্যাপারে তিনি রাষ্ট্রপ্রধানদের প্রভাব বিস্তার করতে অনুরোধ জানান। যদিও ইন্দিরা গান্ধী জানতেন তার এই চাওয়াকে বিশ্বের পুঁজিবাদী রাষ্ট্রগুলো সহজে মেনে নেবে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন এদের সরাসরি বিরোধিতাকে উপেক্ষা করে তিনি সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে মৈত্রী স্থাপন করেন। উদ্দেশ্য একটাই, আর সেটা হলো বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধুর মুক্তিলাভ। বলা বাহুল্য, সোভিয়েত-ভারত মৈত্রী চুক্তির মাধ্যমে বিশ্বের অন্যতম প্রধান শক্তিকে কাছে পায় বাংলাদেশ। এই চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে বৃহৎ শক্তি সোভিয়েত ইউনিয়নকে পাশে পেয়েছে।   

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধুর মুক্তির প্রশ্নে ইন্দিরা গান্ধী ১৯৭১ সালের ৪ নভেম্বর ওয়াশিংটনে প্রেসিডেন্ট নিক্সনের প্রদত্ত সম্বর্ধনাতেও বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রাম এবং বঙ্গবন্ধুর প্রতি সুবিবেচনা ও সহানুভূতির প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছিলেন। এমন কি তিনি ১৯৭১ সালের ২৭ নভেম্বর তারিখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তির জন্য ইয়াহিয়ার প্রতি আহবান জানান। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানের দিনেও শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী যে তিনটি শপথের উল্লেখ করেছিলেন তার মধ্যে প্রথম ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা, দ্বিতীয় শেখ মুজিবের মুক্তি এবং তৃতীয় হলো ভারতে আগত লক্ষ লক্ষ উদ্বাস্তুর স্বাধীন বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো।

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিজয় অর্জিত হলেও বঙ্গবন্ধুর মুক্তির ব্যাপারে প্রতীক্ষার শেষ হচ্ছিল না। এ বিষয়ে ইন্দিরা গান্ধী এবং তার প্রশাসন খুবই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। এ সময় গোয়েন্দা সংস্থা 'র (RAW)' এর সেকেন্ড ইন কমান্ড কে. শাংকারান নায়ার জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছিলেন ভূট্টোর সম্মতি আদায়ে। শেষ পর্যন্ত খবরটি ইন্দিরা গান্ধীর সাউথ ব্লকে জানাজানি হলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি। বিশিষ্ট কূটনীতিক শশাঙ্ক ব্যানার্জী লিখেছেন, ভূট্টোর গোপন গেম-প্ল্যান সম্পর্কে নয়াদিল্লী জানতো না এমন নয়। তার জায়গা থেকে ভারত ভূট্টোর এই ইতিবাচক কাজের জবাব দিতে প্রস্তুত ছিল। রাওয়ালপিন্ডি থেকে জীবিত মুক্তি পাওয়ায় মুজিবের  সাথে ভারতের আবেগময় যাত্রা সম্পূর্ণ হল। দিল্লীর সাউথ ব্লকে, সেক্রেটারিয়েট বিল্ডিং-এ এবং মিনিস্ট্রি অব এক্সটারনাল অ্যাফেয়ার্স-এ এক ধরনের অকল্পনীয় আনন্দ উৎসব শুরু হলো যা ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতার আনন্দের পর খুব বেশি পাওয়া যায়নি। ভূট্টোর এই কাজের প্রতি দিল্লীর কৃতজ্ঞতা ছিল অসীম।

বঙ্গবন্ধু মুক্তি পাবার পর লন্ডন থেকে ঢাকা আসার পথে ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাৎ ছিল উভয় দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তখনও সদ্যস্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের স্বীকৃতি ছিল কেবলমাত্র ভারত এবং ভূটানের মধ্যে সীমাবদ্ধ। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে তখনও ভারতের সেনাবাহিনীর অবস্থান অন্য দেশের স্বীকৃতি আদায়ের ক্ষেত্রে ছিল বড় বাধা। ফলে ১৯৭২ সালের ৯ জানুয়ারি লন্ডনে অবস্থানকালে বঙ্গবন্ধুকে যখন ইন্দিরা গান্ধী টেলিফোনে নয়াদিল্লী ঘুরে যাবার আমন্ত্রণ জানান, বঙ্গবন্ধু সেটা গ্রহণ করেন।

লন্ডন থেকে বিমানযাত্রায় বঙ্গবন্ধুর সহযাত্রী ছিলেন ভারতীয় বিখ্যাত কূটনীতিক শশাঙ্ক ব্যানার্জী। অত্যন্ত সফল সেই পথযাত্রাতেও ছিল অনেক কূটনীতির প্রসঙ্গ।  শশাঙ্ক ব্যানার্জী লিখেছেন, 'কিছুক্ষণ হাসি ঠাট্টা ও অরেঞ্জ জুস পানের পর মুজিব বেশ গোপনীয়ভাবে ফিসফিস করে আমাকে একটা বিষয়ে সহযোগিতার জন্য বললেন। তাঁর কথায় কোন দ্বিধা ছিল না। আমি আমার ক্ষমতায় থাকলে করবো বলে তাঁকে জানালাম। এবার তিনি কথাটা বললেন। তিনি  চাইছেন দিল্লী পৌঁছানোর সাথে সাথেই আমি [শশাঙ্ক ব্যানার্জী] যেন তাঁর একটি ব্যক্তিগত বার্তা মিসেস ইন্দিরা গান্ধীর কাছে পৌছে দেই।' আর এই বার্তাটি ছিল ১৯৭২ সালের ৩১ মার্চ তারিখের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে ভারতের সকল সৈন্য প্রত্যাহার করা। দিল্লি বিমান বন্দরে নামার সঙ্গে সঙ্গে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী দুর্গাপ্রাসাদ ধর শশাঙ্ক ব্যানার্জীর কাছে বঙ্গবন্ধুর অভিপ্রায় জানতে চেয়েছিলেন। শশাঙ্ক ব্যানার্জী ডিপি ধরকে বঙ্গবন্ধুর ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু বিষয়টি এতোটা সহজ ছিল না। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর সম্মানে এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টির সমাধান সেদিনই করা হয়েছিল। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। তিনি আভ্যন্তরীণ আলোচনা সেরে নিলেন। যাদের সঙ্গে আলোচনা করলেন তাঁরা হলেন ভারতের ইন্টেলিজেন্স প্রধান রাম নাথ কাও, পররাষ্ট্র সচিব টি এন কাউল, রাজনৈতিক উপদেষ্টা পি এন হাকসার, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডিপি ধর, চিফ অব আর্মি স্টাফ জেনারেল শ্যাম মানেকশ। সিদ্ধান্ত নেয়া হলো রাষ্ট্রপতি ভবনের বৈঠকে বঙ্গবন্ধু যদি বিষয়টির অবতারণা করেন তাহলে ১৯৭২ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহার করায় সম্মতি দান করা হবে। এত দ্রুত একটি দেশের নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ভারত কেন  অন্য কোন দেশ নিতে পেরেছে কিনা সন্দেহ! এই সিদ্ধান্ত ছিল প্রথম বাংলাদেশের প্রতি ভারতের নিঃশর্ত বন্ধুত্বের প্রমাণ। অপরদিকে, বঙ্গবন্ধুর ক্ষেত্রেও এটি ছিল প্রথম কূটনতিক সাফল্য। অপরপক্ষে শশাঙ্ক ব্যানার্জীও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডিপি ধরের পরামর্শে নতুন বাংলাদেশ ঘিরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মনোভাব জানার চেষ্টা করেন। বাংলাদেশে সংসদীয় গণতান্ত্রিক পদ্ধতির সরকার, রাষ্ট্রপতি পদে বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী এবং বঙ্গবন্ধুকে প্রধানমন্ত্রী পদে দায়িত্ব গ্রহণ ইত্যাদি বিষয়েও শশাঙ্ক ব্যানার্জীর আলোচনা উঠে আসে। উভয়পক্ষের জন্যই এটা ছিল একটা সফল মিশন । শশাঙ্ক ব্যানার্জী যথার্থই বলেছেন, 'মুজিবের সাথে রয়্যাল এয়ারফোর্সের এর কমেট জেটে  সফর করার সুযোগ ছিল ১৩ ঘণ্টার যাত্রা, আর পথে দু'বার রিফুয়েলিংয়ের জন্য থামা। সেটা আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক মিশনে পরিণত হয়।

১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দিল্লীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বাধীন দেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বিপুল সম্বর্ধনা জানানো হয়। বঙ্গবন্ধু দিল্লি  পৌঁছেন ভারতীয় সময় ৮টা ৬ মিনিটে। বিমান থেকে বঙ্গবন্ধু বের হবার সঙ্গে সঙ্গে সমবেত জনতার 'জয় বাংলা' ধ্বনিতে আকাশ বাতাস মুখরিত হয়ে ওঠে। ২১ বার তোপধ্বনি করে তাঁকে অভ্যর্থনা করা হয়। বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি শ্রী গিরি ও প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী গান্ধী তাঁকে স্বাগত জানান। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী তাঁকে স্বাগত জানাবার পরে শেখ মুজিব অন্যান্য মন্ত্রী এবং সমবেত অন্যান্যদের সঙ্গে করমর্দন করেন। শুধু ভারতই নয়, দিল্লি বিমানবন্দরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অভ্যর্থনার জন্য ২৩টি দেশের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। যে দেশগুলোর কূটনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন- বেলজিয়াম, ভুটান, বুলগেরিয়া, কলম্বিয়া, কিউবা, চেকোশ্লাভিকিয়া, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, পূর্ব জার্মান, পশ্চিম জার্মান, হাঙ্গেরি, আয়ারল্যান্ড, ইটালি, মরিসাস, মঙ্গোলিয়া, নরওয়ে, পোল্যান্ড, সোভিয়েত ইউনিয়ন, ব্রিটেন, ভ্যাটিকান সিটি এবং যুগোশ্লোভিয়া। সোভিয়েত ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত সকলের আগে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। 

আমজনতাও বাদ যায়নি। দিল্লির কনকনে শীত উপেক্ষা করে লক্ষ লক্ষ জনতা ভিড় করছে পালাম বিমান বন্দরে। শুধু এক নজর বঙ্গবন্ধুকে দেখার জন্য, তাঁর বক্তৃতা শোনার জন্য। অসাধারণ কৃতজ্ঞতা আর শ্রদ্ধাবোধ জানিয়ে বঙ্গবন্ধু জনসভাতে বললেন, 'আমার দেশের কোটি কোটি মানুষের হাসির প্রস্রবণে অবগাহন করতে আমি ছুটে যাচ্ছি। কিন্তু অন্ধকার থেকে আলোকের পথে যাবার আগে ভারতভূমিতে দাঁড়িয়ে আমার চিরন্তন কৃতজ্ঞতা জানিয়ে গেলাম ভারতের জনগণের প্রতি, অনন্যা ও অসাধারণ তার প্রধানমন্ত্রীর প্রতি, তার সেনাবাহিনী ও সাধারণ মানুষ- এদের সকলের প্রতিই বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের অপরিসীম কৃতজ্ঞতা। 

ভারতের প্রধানমন্ত্রী শুধু তার দেশেরই নেত্রী নন, তিনি সমগ্র মানব জাতির নেত্রী। তাঁর কাছে ব্যক্তিগতভাবেও আমি কৃতজ্ঞ। শ্রীমতী গান্ধী পৃথিবীর প্রতি রাষ্ট্রের দুয়ারে দুয়ারে ধরণা দিয়েছেন। বলেছেন, মুজিবকে মুক্ত কর, একটা রাজনৈতিক মীমাংসায় আসো।'

১৯৭২ সালের ১১ জানুয়ারি কলকাতার যুগান্তর পত্রিকা লিখেছিল দিল্লীতে এ সম্বর্ধনা আর কেউ পায়নি। পত্রিকাটি লিখেছিল, 'স্বাধীনতার পর গত ২৫ বৎসর [১৯৭২] বহু রাষ্ট্রপ্রধানকে সম্বর্ধনা জানানো হয়েছে, কিন্তু এমনটি আর কখনও দেখা যায়নি। এ যেন যুদ্ধজয়ের পর স্বদেশ প্রত্যাগত বীরের প্রতি সম্বর্ধনা। অভ্যর্থনার স্বতঃস্ফূর্ততা ও আন্তরিকতার জন্য আজকের দিনটি অবিস্মরণীয় নয় অথবা বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভ ও শেখ মুজিবের মুক্তি এই যুগল জয়ে ভারত ও বাংলাদেশের সাড়ে ৬২ কোটি অধিবাসীর সম্মিলিত আনন্দোচ্ছ্বাসের জন্যই আজকের দিনটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে না। আজকের দিনটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে কারণ বঙ্গবন্ধুর এই ঐতিহাসিক সফরের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র, ধর্ম নিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্রের আদর্শের দৃঢ়ভিত্তির ওপর দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মধ্যে ঐক্য ও মৈত্রী সুপ্রতিষ্ঠিত হলো।'

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্ব প্রদানের অনেক শক্তিশালী গুণাবলী ছিল। অনেক বৈশ্বিক নেতার চেয়ে তাঁকে সুউচ্চ পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিল যে বিষয়গুলো তা হলো- (১) তাঁর কৌশলগত দূরদৃষ্টি; (২) তাঁর সাহস ও লক্ষ্য স্থিরতা। এ কারণেই তিনি বুঝতে পেরেছিলেন বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অবস্থান বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদানের ক্ষেত্রে বাঁধাগ্রস্ত করবে। এ জন্য ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি তিনি লন্ডন থেকে ঢাকা ফেরার পথেই দিল্লিতে এ বিষয়ে ইন্দিরা গান্ধীর সহযোগিতা আদায় করতে সক্ষম হয়েছিলেন। মাত্র কয়েক ঘণ্টার  বিরতিতে বঙ্গবন্ধু দিল্লীর কূটনৈতিক সাফল্যের অজেয় শক্তিতে বলীয়ান হয়ে বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরলেন বীরের বেশে! 

বাঙালি জাতির জন্য এটা এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। অত্যন্ত আবেগময় এই দিনটিকে বাঙালি জাতির শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা উচিত।
 
লেখক: ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম,অধ্যাপক, ইতিহাস বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাক্তন আই সি সি আর রিসার্চ স্কলার, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়, দার্জিলিং, ভারত

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –