নৈতিকতার অভাবে অর্থনৈতিক সংকট
প্রকাশিত: ২৩ জানুয়ারি ২০২১
আর্থিক উন্নয়ন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ইসলাম সামগ্রিক চিন্তার প্রবক্তা। আর সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য অর্থনীতিতে নৈতিক মাপকাঠি নির্ধারণ করা আবশ্যক। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ জনপদবাসীদের কাছ থেকে তাঁর রাসুলকে যা কিছু দিয়েছেন তা আল্লাহর, তাঁর রাসুলের, রাসুলের স্বজনদের, এতিমদের, অভাবগ্রস্ত ও পথচারীদের। যাতে তোমাদের মধ্যে যারা বিত্তবান, শুধু তাদের মধ্যেই ঐশ্বর্য আবর্তন না করে।’ (সুরা হাশর, আয়াত : ৭)
অর্থনীতির সঙ্গে নৈতিকতার সম্পর্ক
পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থায় অর্থশাস্ত্র ও নীতিশাস্ত্র পরস্পরবিরোধী হলেও ইসলামে উভয় শাস্ত্র পরস্পরের সঙ্গে গভীরভাবে সম্পৃক্ত। একজন মুমিনের আর্থিক জীবন তার বিশ্বাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সে বিশ্বাস করে, তার ভালো-মন্দ কাজের ভিত্তিতে আল্লাহ জীবন-জীবিকায় স্বাচ্ছন্দ্য ও সংকীর্ণতা দান করেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘যে আল্লাহকে ভয় করে আল্লাহ তার পথ করে দেন এবং তাকে জীবিকা প্রদান করেন ধারণাতীত উৎস থেকে।’ (সুরা তালাক, আয়াত : ২-৩)
অন্যদিকে পাপের শাস্তি হিসেবে আর্থিক সংকট প্রদানের ব্যাপারে ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি ফেরাউনের অনুসারীদের দুর্ভিক্ষ ও ফল-ফসলের ক্ষতির দ্বারা আক্রান্ত করিয়েছি, যাতে তারা অনুধাবন করে।’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ১৩০)
তবে কোরআনের ব্যাখ্যাকাররা বলেন, জীবন-জীবিকায় ভাগ্য ক্রীয়াশীল হলেও আর্থিক অনৈতিকতা সমাজ ও রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, আর্থিক প্রবাহ ও সম্পদের সুষম বণ্টনে বাধা সৃষ্টি করে। তাই বলা যায়, মানুষ তার কর্মফলই ভোগ করে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যদি সেসব জনপদের অধিবাসীরা ঈমান আনত ও আল্লাহভীতি অবলম্বন করত, তবে আমি তাদের জন্য আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর কল্যাণ উন্মুক্ত করতাম; কিন্তু তারা প্রত্যাখ্যান করেছিল; সুতরাং তাদের কৃতকর্মের জন্য তাদের শাস্তি দিয়েছি।’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ৯৬)
আর্থিক অনৈতিকতা বন্ধে ইসলাম
সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য অন্তরায় এমন সব কাজ ইসলাম অনৈতিক ঘোষণা করেছে এবং তার বিরুদ্ধে ইহকালীন ও পরকালীন শাস্তি ঘোষণার মাধ্যমে তা থেকে নিরুৎসাহ করেছে। যার কয়েকটি নিম্নে তুলে ধরা হলো,
১. ঘুষ : ঘুষ একটি আর্থিক অপরাধ ও অনৈতিক কাজ। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে ঘুষের লেনদেন আর্থিক উন্নয়নকে দারুণভাবে ব্যাহত করে এবং জনগণকে আর্থিকসহ প্রায় সব রাষ্ট্রীয় সেবা থেকে বঞ্চিত করে। হাদিসে এসেছে, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) ঘুষদাতা ও ঘুষ গ্রহীতা উভয়কে অভিশাপ করেছেন।’ (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৩৫৮০)
২. রাষ্ট্রীয় সম্পদের অসদ্ব্যবহার : রাষ্ট্রীয় সম্পদের অসদ্ব্যবহার আর্থিক উন্নয়নে বাধা। রাষ্ট্রীয় সম্পদ যথাযথভাবে ব্যবহৃত না হলে, তার সুষম বণ্টন না হলে এবং তা সীমিতসংখ্যক মানুষের হাতে পুঞ্জীভূত হলে সামগ্রিক আর্থিক উন্নয়ন সম্ভব হবে না। রাষ্ট্রীয় সম্পদের ব্যাপারে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি ওমর (রা.)-এর একটি বক্তব্যে স্পষ্ট হয়। তিনি কসম করে বলেন, ‘নিশ্চয়ই এই সম্পদে কেউ কারো চেয়ে বেশি হকদার নয়। আমিও কারো চেয়ে বেশি হকদার নই। এই সম্পদে সব মুসলমানের অধিকার রয়েছে, তবে মালিকানাধীন দাস ছাড়া।’ (আল ফাতহুর রব্বানি, পৃষ্ঠা. ৮৭)
৩. সম্পদ পুঞ্জীভূত করা : প্রচলিত অর্থব্যবস্থায় ব্যক্তি সীমাহীন সম্পদ পুঞ্জীভূত করার সুযোগ পেলেও ইসলাম তাকে অপরাধ বলে ঘোষণা করেছে। ইসলামের মূলনীতি হলো ব্যক্তি সম্পদ অর্জন করবে এবং কল্যাণমূলক কাজে পুনর্বিনিয়োগ করবে। আর তা থেকে নির্ধারিত হারে অসহায় মানুষকে দান করবে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা স্বর্ণ-রৌপ্য পুঞ্জীভূত করে এবং তা আল্লাহর পথে ব্যয় করে না তাদের মর্মন্তুদ শাস্তির সংবাদ দাও।’ (সুরা তাওবা, আয়াত : ৩৪)
৪. সিন্ডিকেট : অবৈধ সিন্ডিকেট জনসাধারণকে আর্থিক সুফল থেকে বঞ্চিত করে। সিন্ডিকেটের কারণে পণ্য উৎপাদক ও ভোক্তা উভয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইসলাম অবৈধ কাজে সব ধরনের পারস্পরিক সহযোগিতা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে বলেছে, ‘তোমরা পুণ্যের কাজ ও আল্লাহভীতিতে পরস্পরকে সহযোগিতা করো এবং পাপ ও সীমালঙ্ঘনে পরস্পরকে সহযোগিতা কোরো না।’ (সুরা মায়িদা, আয়াত : ২)
৫. ঋণখেলাপি : তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর জন্য খেলাপি ঋণ অন্যতম আর্থিক সংকট। গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যমতে, বাংলাদেশের খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রায় এক লাখ ১৬ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা। ইসলাম সময়মতো ঋণ পরিশোধ করার তাগিদ দেয়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি মানুষের সম্পদ গ্রহণ করে (ঋণ নেয়) তা পরিশোধ করার উদ্দেশ্যে আল্লাহ তা আদায়ের ব্যবস্থা করে দেন। আর যে তা নেয় বিনষ্ট করার উদ্দেশ্যে আল্লাহ তাকে ধ্বংস করে দেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৩৮৭)
৬. ক্ষতিকারক পণ্য উৎপাদন ও বিপণন : গণমাধ্যমের তথ্যমতে, বাংলাদেশে প্রতিবছর মাদকের পেছনে ব্যয় হয় ৬০ হাজার কোটি টাকা। শুধু যুক্তরাষ্ট্রে বছরে ৮৭.৮ বিলিয়ন পর্নোগ্রাফি প্রদর্শিত হয় এবং দেশটিতে দিনে পর্নোগ্রাফির ৯৭ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হয়। মাদক ও পর্নোগ্রাফির মতো ক্ষতিকারক উপাদান যা জনসাধারণের আর্থিক, মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য ধ্বংস করে দিচ্ছে তার উৎপাদন, আমদানি ও বাজারজাতকরণ ইসলামের দৃষ্টিতে নিষিদ্ধ। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা, মদ, জুয়া, মূর্তিপূজার বেদি ও বাদ্য নির্ণায়ক শর ঘৃণ্য বস্তু শয়তানের কাজ। সুতরাং তোমরা তা বর্জন করো—যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো।’ (সুরা মায়িদা, আয়াত : ৯০)
৭. সম্পদের অপচয় ও অপব্যয় : ইসলামের দৃষ্টিতে সম্পদের প্রকৃত মালিক আল্লাহ এবং বান্দা তার তত্ত্বাবধায়ক মাত্র। কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠা ও রাষ্ট্র সম্পদের মালিক হলেই সে তার যথেচ্ছা ব্যবহার করতে পারবে না। তা কল্যাণকর পথে ব্যবহার করতে হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা খাও এবং পান করো; কিন্তু অপব্যয় করবে না। নিশ্চয়ই তিনি (আল্লাহ) অপব্যয়কারীকে পছন্দ করেন না।’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ৩১)
মহানবী (সা.) বলেন, ‘কিছু লোক আল্লাহর দেওয়া সম্পদ অন্যায়ভাবে ব্যয় করে, কিয়ামতের দিন তাদের জন্য জাহান্নাম নির্ধারিত।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩১১৮)
৮. দস্যুবৃত্তি ও দুর্বৃত্তায়ন : সামাজিক, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে সম্পদ উপার্জন অর্থনীতির সুষ্ঠু বিকাশের পথে বড় অন্তরায়। ইসলামে সব ধরনের দস্যুবৃত্তি ও দুর্বৃত্তায়ন নিষিদ্ধ। মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা একে অপরের সম্পত্তি অন্যায়ভাবে গ্রাস কোরো না; কিন্তু তোমাদের পরস্পর সন্তুষ্টির সঙ্গে ব্যবসা করা বৈধ।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ২৯)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি অন্যের এক বিঘত পরিমাণ জমিন জবরদখল করে কিয়ামতের দিন তার ঘাড়ে সাত তবক জমিন ঝুলিয়ে দেওয়া হবে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৪৫৩)
আল্লাহ সবাইকে অর্থনৈতিক জীবনে সততা অর্জন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –- মুসলিম উম্মাহর একাত্মতা ফিলিস্তিন সংকট সমাধানে ভূমিকা রাখতে পারে
- বাংলাদেশ-গাম্বিয়া জয়েন্ট বিজনেস টাস্কফোর্স গঠনের প্রস্তাব
- ডর্টমুন্ডের সঙ্গে এক যুগের সম্পর্ক ছিন্ন করছেন এই ফুটবলার
- ব্যাভিচারের বিরুদ্ধে লড়াই করে পুরস্কার পেলেন ‘অভাগী’ মিথিলা
- হজের ক্ষেত্রে শয়তান যেসব ওয়াসওয়াসা দেয়
- মার্কিন বাহিনীর ওপর হামলার পরিকল্পনা ভেস্তে দিলো কুয়েত
- যেসব জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শনিবার বন্ধ থাকবে
- আমাদের কাছে সব প্রার্থী সমান: ইসি রাশেদা
- খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণের আহ্বান প্রধান বিচারপতির
- রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচার দ্রুত নিষ্পত্তি চায় বাংলাদেশ-গাম্বিয়া
- সাত জেলায় দুপুরের মধ্যেই ঝড়-বৃষ্টির আভাস, নদীবন্দরে সতর্কতা
- ‘নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তুলতে হবে’
- বাংলাদেশ-ভারত আজ একই লক্ষ্যে এগোচ্ছে: সেলিম মাহমুদ
- ওরাল ক্যান্সার সম্পর্কে নাগরিকদের সচেতন হতে হব- প্রতিমন্ত্রী রিমি
- তিউনিসিয়ায় নৌকাডুবিতে মৃত ৮ বাংলাদেশির মরদেহ হস্তান্তর
- জানা গেল এসএসসির ফল প্রকাশের তারিখ
- সাংবাদিকরা স্বাধীনভাবে কাজ করছেন: প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান
- তিউনিসিয়ায় নৌকাডুবিতে মৃত ৮ বাংলাদেশির মরদেহ হস্তান্তর
- পরিবারের হাল ধরতে চেয়ে হয়ে গেলেন বোঝা
- রাণীশংকৈলে ভুট্টাক্ষেত থেকে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার
- উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সুন্দরগঞ্জে ২৭ জনের মনোনয়ন দাখিল
- সর্বজনীন পেনশন স্কিম মেলা উপলক্ষে রংপুরে সংবাদ সম্মেলন
- বিভিন্ন দেশে নিষেধাজ্ঞার মুখে ভারতীয় খাদ্যপণ্য
- যে কারণে বিশ্বকাপ দল ঘোষণা করেনি বাংলাদেশ
- ৫৩ বছর বয়সে জীবনসঙ্গী খুঁজছেন মনীষা
- ইসলামের দৃষ্টিতে শ্রমিক মালিকের পরিবারভুক্ত
- `নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তুলতে হবে`
- সরকারি গুদামে হয়রানি করা হলে কঠোর ব্যবস্থা: খাদ্যমন্ত্রী
- সংসদ অধিবেশন চলবে ৯ মে পর্যন্ত
- ভারত-বাংলাদেশের আন্তঃসীমান্ত নদীর বন্যার তথ্য আদান-প্রদান শুরু
- অবশেষে আজ তাপমাত্রা কমার পূর্বাভাস
- শেষ বলে ১ রানের নাটকীয় জয় পেল কলকাতা
- কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ
- পরিবেশ সংরক্ষণ সংক্রান্ত বিষয় পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে
- আন্তর্জাতিক চাপে মুক্ত হয়েছেন বাংলাদেশি নাবিকরা: নৌপ্রতিমন্ত্রী
- হজ পালনে অনুমতি বাধ্যতামূলক করল সৌদি
- যে কারণে বিশ্বকাপ দল ঘোষণা করেনি বাংলাদেশ
- ‘বনভূমি দখলে স্থাপিত রিসোর্টগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালবে’
- নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা হস্তক্ষেপ করবে না: ওবায়দুল কাদের
- শিলাবৃষ্টির আশঙ্কা, তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে
- ইসরায়েলের এই বর্বরতা মেনে নেয়া যায় না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- লালমনিরহাটে যুবলীগ কর্মীর পায়ের রগ কাটলেন যুবদল নেতা
- ২ মে থেকে বৃষ্টির সম্ভাবনা, হতে পারে কালবৈশাখীও
- ‘সব প্রাইভেট হাসপাতালের রোগনির্ণয় ফি নির্ধারণ করা হবে’
- কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ হোক মানুষের কল্যাণে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- জনপ্রিয় অভিনেতা রুমি মারা গেছেন
- ত্বকের দাগ দূর করবেন যেভাবে
- গরমকালে বাড়ি ঠান্ডা রাখার চীনা প্রাচীন কৌশল
- কোরবানির নিয়তের পর পশু বিক্রি করার বিধান
- ‘যাকাত বোর্ড শক্তিশালী হলে দারিদ্র্য বিমোচন ত্বরান্বিত হবে’