• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

সর্বশেষ:
বাংলাদেশকে হুমকির মুখে ফেলেছে ক্রমবর্ধমান জলরাশি: গবেষণা উত্তরবঙ্গের মহাসড়কে চার লেন চালু, ঈদযাত্রা হবে স্বস্তির সব উন্নয়ন সহযোগীদের এক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী বিডিএস ভূমি ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে: ভূমিমন্ত্রী বিএনপির নিগৃহীত নেতাকর্মীদের তালিকা দিতে হবে: ওবায়দুল কাদের

‘করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে গেলে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন’

প্রকাশিত: ৪ মে ২০২১  

মার্চ থেকে করোনা মৃত্যু ও সংক্রমণ বাড়লেও এপ্রিলের শেষের দিকে তা কমে এসেছে। এর মধ্যে শপিংমল খুলে দেওয়ায় চলমান সর্বাত্মক ‘লকডাউনের’ মধ্যেও মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেন। বিশেষ করে ঈদকে সামনে রেখে সড়ক কিংবা শমিংমলে জনসমাগম বেড়েছে। এতে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতে পারে বলে অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

এমন পরিস্থিতিতে করণীয় কি? সার্বিক বিষয় নিয়ে মঙ্গলবার (৪ মে) আমাদের কাছে নানাদিক তুলে ধরেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সুলতানা শাহানা বানু। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন কবির হোসেন।

প্রতিবেদক: কেমন আছেন?

সুলতানা শাহানা বানু: আলহামদুলিল্লাহ, ভালো আছি।

প্রতিবেদক : গত দুই সপ্তাহে দেশে করোনার সংক্রমণ অনেক কমে এসেছে। বিষয়টা আপনি কিভাবে দেখছেন?

সুলতানা শাহানা বানু: এখনো নির্দিষ্ট করে বলার সময় হয়নি। সংক্রমণ কমছে কারণ এখন তুলনামূলকভাবে করোনা টেস্ট কম হচ্ছে, তাই সংক্রমণও কম দেখাচ্ছে। যখন করোনা টেস্টের সংখ্যা বেশি হবে তখন বোঝা যাবে সংক্রমণ বাড়ছে নাকি কমছে।

প্রতিবেদক: চিকিৎসকদের অনেকেই বলছেন করোনার ধরণ বদলাচ্ছে। আপনি নিজেও করোনার ধরণ বদলানোর বিষয়টি তুলে ধরেছেন।এ প্রসঙ্গে জানতে চাই?

সুলতানা শাহানা বানু: আমরা করোনাকে নানাভাবে প্রতিরোধ করছি। প্রতিরোধের জন্য আমরা শরীরের এন্টিবডি তৈরি করছি। ভ্যাকসিন গ্রহণের পর অনেকের শরীরের ইনফেকশন হচ্ছে। এ ভাইরাসটি শরীরে ঢুকে নিয়ট্রিশনের মাধ্যমে আরও শক্তিশালী হচ্ছে। এইটা মারাত্মক। নতুন যে ভ্যারিয়েন্টের কথা আমরা বলছি সেটা তিনগুণ বেশি শক্তিশালী। সাউথ আফ্রিকার ভ্যারিয়েন্ট থেকে কলকাতা যে ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমণ হচ্ছে সেটা আরও ভয়ংকর। আমাদের দেশে একবার ছড়িয়ে গেলে সেটা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন।
প্রতিবেদক: ঈদকে সামনে রেখে অনেকেই গ্রামের বাড়ি যাবেন।এতে কি গ্রামের সংক্রমণের আশঙ্কা করছেন?

সুলতানা শাহানা বানু: এ সময়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। কোনোভাবেই জনসমাগম করা যাবে না। ঈদকে সামনে রেখে যারা গ্রামের বাড়িতে বা বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন, তাদের উদ্দেশ্যে বলবো- দয়া করে জায়গা ত্যাগ করবেন না। যেখানে আছেন সেখানে থাকুন। নাহলে আবারও সংক্রমণ ছড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়লে খারাপ ফল ভোগ করতে হবে।

প্রতিবেদক: তাহলে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট আমাদের দেশে ছড়ানোর শঙ্কা আছে কি?

সুলতানা শাহানা বানু: আমাদের দেশের চারপাশে ভারতের বর্ডার রয়েছে। যদি ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে আমাদের দেশে মানুষ প্রবেশ করে তাহলে নিশ্চয়ই ছড়াবে। তাই ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশের ক্ষেত্রে প্রত্যেকে করোনা পরীক্ষা করে প্রবেশের অনুমতি দিতে হবে। ভারতে কিছুদিন আগে উৎসব পালন করতে হাজার হাজার মানুষ একসঙ্গে জড়ো হয়েছিল। আর পরেই তাদের সংক্রমণ বাড়তে থাকে। আমাদের এ বিষয়ে সতর্ক হতে হবে। গেদারিং করা যাবে না।

প্রতিবেদক: শপিংমলগুলোতে ক্রেতারা ভিড় করছে। এখান থেকেও সংক্রমণ ছড়ানোর শঙ্কা আছে কি?

সুলতানা শাহানা বানু: অবশ্যই ছড়াচ্ছে। দেখলাম বাচ্চাদের নিয়ে অনেকে মার্কেট যাচ্ছে। এখন শুধু শুধু বয়স্করাই করোনা আক্রান্ত হচ্ছে না। তরুণ ও শিশুরাও করোনা আক্রান্ত হচ্ছে। তাই কোথাও ভিড় না করাই উত্তম। মার্কেটগুলো থেকে সংক্রমণ ছড়াবে। তাই অবশ্যই সবাইকে মাস্ক পরতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।

প্রতিবেদক: তাহলে সহজে সংক্রমণ কমছে না সেটা বলা যায় কি?

সুলতানা শাহানা বানু: সহজে কোনো মহামারি দূর হয় না। প্রতিরোধ করতে না পারলে অনেক দিন থেকে যায়। সেক্ষেত্রে সর্বমহলে সতর্ক হতে হবে। বিধিনিষেধ মানতে হবে। না হলে দীর্ঘ সময় এর ফল ভোগ করতে হবে।

প্রতিবেদক: এমন ব্যস্ততার মাঝে সময় দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

সুলতানা শাহানা বানু: আপনাকেও ধন্যবাদ।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –