• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

সর্বশেষ:
বাংলাদেশকে হুমকির মুখে ফেলেছে ক্রমবর্ধমান জলরাশি: গবেষণা উত্তরবঙ্গের মহাসড়কে চার লেন চালু, ঈদযাত্রা হবে স্বস্তির সব উন্নয়ন সহযোগীদের এক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী বিডিএস ভূমি ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে: ভূমিমন্ত্রী বিএনপির নিগৃহীত নেতাকর্মীদের তালিকা দিতে হবে: ওবায়দুল কাদের

তেঁতুলিয়ায় গৃহবধূকে মেরে ভিটে ছাড়া করলো শ্বশুরবাড়ির লোকজন

প্রকাশিত: ৩ মার্চ ২০২১  

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় আঞ্জুমান আরা আঁচল নামে এক গৃহবধূকে মারধর করে ভিটে ছাড়া করেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এমনকি তার স্বামীর দোকানটিও লুটপাট করেছে তারা। মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হয়েছেন মা মিনি আক্তারও। স্থানীয়রা তাদের পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করেছে।

বুধবার দুপুরে ওই উপজেলার ডাঙ্গাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মারধরের শিকার আঞ্জুমান আরা আঁচল ওই এলাকার সাইফুল ইসলাম বিজয়ের স্ত্রী।

তিনি বলেন, আমার স্বামী ২০১৯ সালের ২৬ ডিসেম্বর সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। মৃত্যুর কয়েকদিন আগে আমার নামে দোকান ও বাড়িসহ সাড়ে ৫২ শতক জমি লিখে দেন বিজয়। বিজয় মারা যাওয়ার পর তার সৎ চাচা মোহাম্মদ আলী, আব্দুর কাদের ও ফুফাতো ভাই হারুন মিলে আমাকেকে ভিটে ছাড়া করতে উঠে পড়ে লাগে। এক পর্যায়ে বিজয়ের রেখে যাওয়া দোকানে তালা মেরে দেয় তারা। একই সঙ্গে স্বামীর ভিটে ছেড়ে চলে যেতেও হুমকি দেয়া হয় আমাকে।

মঙ্গলবার রাতে বিষয়টি নিয়ে তেঁতুলিয়া মডেল থানায় দুই পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করে সমাধানের চেষ্টা পুলিশ। কিন্তু বৈঠক অমীমাংসিত থাকে। বুধবার দুপুরে আঁচল দোকান খুলতে গেলে তাকে ও তার মাকে মারধর করে করে বিজয়ের সৎ চাচা মোহাম্মদ আলী, আব্দুল কাদের, চাচাতো ভাই হারুনসহ চারজন। ওই সময় তারা দোকানের মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে তেঁতুলিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখান থেকে তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।

আঁচল বলেন, আমার স্বামী আমাকে বাড়ি ও দোকানসহ সাড়ে ৫২ শতক জমি লিখে দেয়ায় তারা আমাকে সহ্য করতে পারছে না। এমনকি আমার স্বামী মারা যাওয়ার পর একদিনের জন্যও আমাকে দোকান খুলতে দেয়নি। প্রতিদিন আমাকে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হুমকি দিতো। মঙ্গলবার রাতে থানায় বৈঠক হয়। কিন্তু তারা কোনো সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ। অথচ তারা আমার স্বামীর আপন কেউ না, দুঃসম্পর্কের স্বজন।

তিনি আরো বলেন, দোকানটি চালু করতে না পারায় আমি খুব কষ্টে জীবনযাপন করছিলাম। পরে আমি নিরুপায় হয়ে একাই দোকান খুলতে গেলে তারা আমার ও আমার মায়ের ওপর হামলা করে দোকান লুট করে প্রায় ৩ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে যায়। আমি আমার স্বামীর ভিটেতে থাকতে চাই। যারা আমার উপর হামলা করেছে তাদের বিচার চাই।

অভিযোগ অস্বীকার করে আঁচলের সৎ চাচা শ্বশুর মোহাম্মদ আলী বলেন, আমরা কেউ আঁচলকে মারধর করিনি বরং সেই আমার স্ত্রী আয়েশা আক্তারকে মেরেছে। নিজেই দোকান ভাঙচুর করেছে। আমরা তাকে দোকানের মালামাল বুঝিয়ে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সে মালামাল না নিয়ে দোকানের দখল চায়।

তেঁতুলিয়া মডেল থানার ওসি আবু সায়েম মিয়া বলেন, ওই গৃহবধূ দীর্ঘদিন ধরেই নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। মঙ্গলবার রাতে আমরা বিজয়ের রেখে যাওয়া দোকান খোলার বিষয়ে দুই পক্ষকে নিয়ে থানায় বসেছিলাম। কিন্তু বিষয়টি অমীমাংসিত অবস্থাতেই শেষ হয়। এরপর আজকে ওই গৃহবধূ দোকান খুলতে গেলে তাকে মারধর করা হয়।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –