নির্যাতনের পর তাসমিরাকে হত্যার অভিযোগ, স্বামী গ্রেফতার

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে তাসমিরা আক্তার (২২) নামে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর স্বামী শাহীন ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

শুক্রবার সকালে পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নের গাজকাটি এলাকায় শয়নঘর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। 

এদিকে, পুলিশ নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন পেয়ে প্রাথমিক সুরতহাল শেষে দুপুরে ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।

জানা যায়, নিহত গৃহবধূ তাসমিরা একই এলাকার জয়নালের ছেলে শাহীন ইসলামের স্ত্রী এবং তিনি নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়নের ঠাকুরগঞ্জের মুছার মেয়ে।

নিহতরের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শাহীনের সঙ্গে তাসমিরার বিয়ে হয়েছে প্রায় ৭ বছর আগে। তাদের সংসারে দুই বছর ও ছয় মাস বয়সের দুটি সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন সময় তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য লেগে থাকতো। স্বামী-স্ত্রীর এই দ্বন্দ্বে শ্বশুরবাড়ির লোকজন ইন্ধন দিতো। মিরাকে ছোটখাটো কারণে অথবা বিনা কারণেও প্রচুর মারধর করা হতো। এ নিয়ে একাধিকবার পারিবারিকভাবে সালিশ হয়। কিন্তু নির্যাতনের মাত্রা কমেনি।

বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) সকালে তাসমিরার স্বামী মারধর করলে তিনি শ্বশুরবাড়ি থেকে বেরিয়ে বাবার বাড়ি চিলাহাটিতে যান। এ সময় তার দুই সন্তানকে নিতে চাইলেও শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাতে রাজি হননি। পরে স্বামী শাহীন চিলাহাটিতে থাকা তার বোনকে মুঠোফোনে বিষয়টি জানান। তার বোন খবর পেয়ে চিলাহাটি থেকে বাসায় ফিরিয়ে আনেন তাকে। বাসায় আসার পর আবারো মারধর করা হয়। শুক্রবার সকালেও তাকে মারধর করা হয়েছে বলে প্রতিবেশীর কাছে শোনেন পরিবারের সদস্যরা।

পরিবারের দাবি, তাসমিরাকে নির্যাতন করে মেরে ফেলার পর রশিতে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তার শরীরে একাধিক জায়গায় মারধরের চিহ্ন রয়েছে। আঘাতের কারণে তার পা দিয়ে রক্ত ঝরছিল।

দেবীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) রঞ্জু আহম্মেদ জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে ঝুলন্ত অবস্থায় শোবার ঘর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। স্বামী শাহীন ইসলামকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।