• বৃহস্পতিবার ১৬ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ২ ১৪৩১

  • || ০৭ জ্বিলকদ ১৪৪৫

পঞ্চগড়ে বাড়ছে শীতের প্রকোপ, দুর্ভোগে খেটে খাওয়া মানুষ

প্রকাশিত: ২৪ ডিসেম্বর ২০২২  

পঞ্চগড়ে হেমন্তের শুরুতেই শীতের দেখা মিললেও শীতের তীব্রতা বাড়তে শুরু করেছে গত কয়েক দিন থেকে। ঘন কুয়াশার সঙ্গে বেড়েছে উত্তরের ঠাণ্ডা বাতাস। শুরুতে শীতের তেমন প্রভাব না পড়লেও বর্তমানে এ জনপদের মানুষের দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষেরা।

কনকনে ঠাণ্ডার মধ্যে দুমুঠো ভাতের সংগ্রামে বের হতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। বেশির ভাগ সময় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে প্রান্তিক এ জনপদে। শনিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়। এদিকে শীতের প্রকোপ বাড়ায় হাসপাতালগুলোতে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা।

স্থানীয়রা জানান, হেমন্তের শুরুতে শীত এলেও তেমন দাপট ছিল না তখন। তবে গত কয়েক দিন ধরে শীতের আসল রূপ দেখছে পঞ্চগড়ের মানুষ। শীতের তীব্রতা বেশি থাকছে সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত। কোনো কোনো দিন সকাল ১০টার আগে সূর্যের দেখা মিলছে না। পরে সূর্যের দেখা মিললেও কমছে না শীতের তীব্রতা। আবার বিকেল গড়াতেই তাপমাত্রা নামতে শুরু করে। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে কুয়াশা পড়া শুরু হয়। রাতভর বৃষ্টির মতো ঝরে কুয়াশা! সেই সঙ্গে উত্তরে ঠাণ্ডা বাতাসে হাড়কাঁপা শীত অনুভূত হচ্ছে। সকালে ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকছে পথঘাট। এই সময়ে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহনগুলো। ঘটছে দুর্ঘটনাও।  

ভ্যানচালক মজিবর রহমান বলেন, ‘শীতের তীব্রতা বাড়লে আমাদের জন্য কষ্ট হয়। তারপরও জীবিকার তাগিদে কাজে বের হতে হয়। ’ পঞ্চগড় জেলা শহরের বাসিন্দা মোবারক আলী বলেন, এত দিন শীত থাকলেও অতটা টের পাওয়া যায়নি। এখন শীতের দাপট বোঝা যাচ্ছে। শুক্রবার রাতভর ঘন কুয়াশার কারণে কিচ্ছু দেখা যাচ্ছিল না। কিন্তু শনিবার সকালে একটু তাড়াতাড়িই সূর্যের দেখা মেলে। তবে থেমে থেমে বইছে ঠাণ্ডা বাতাস। সূর্যের দেখা মিললে কিছুটা স্বস্তি মিলে। ’ 

এদিকে শীতের তীব্রতা বাড়ায় হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। ডায়েরিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, সর্দি জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে তারা। ১০০ শয্যার হাসপাতালটিতে দৈনিক ১৮০ থেকে ২০০ জন রোগী বিভিন্ন রোগে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। শয্যা না থাকায় মেঝে ও বারান্দা পর্যন্ত রোগীতে ভর্তি থাকছে। এ ছাড়া বহির্বিভাগে দৈনিক সাড়ে চার শ থেকে ৫০০ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। যাদের বেশির ভাগই শীতজনিত রোগে আক্রান্ত।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, 'দিন দিন শীতের তীব্রতা আরো বাড়বে। ডিসেম্বরের শেষের এই কয়েক দিন মৃদু শৈত্যপ্রবাহের পূর্বাভাস রয়েছে। ' 

পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আজাদ জাহান বলেন, আমরা সরকারিভাবে ২২ হাজার ৬০০ শীতবস্ত্র পেয়েছি। তা পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া আরো বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। বরাদ্দ পেলে তা শীতার্তদের মাঝে বিতরণ করা হবে।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –