• মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ৫ ১৪৩০

  • || ০৮ রমজান ১৪৪৫

জ্বালানি থেকে বাড়তি টাকা তুলে সড়ক সংস্কার করা হবে

প্রকাশিত: ১৭ জানুয়ারি ২০২২  

বাংলাদেশের সড়ক পথে মোটরযানে যত জ্বালানি ব্যবহৃত হয়, সেসব জ্বালানির মূল্য থেকে সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ তহবিল বাবদ প্রতি লিটার বা ইউনিটে এক টাকা করে আদায় করার প্রস্তাব করেছে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়।

সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ তহবিল বোর্ড বিধিমালার যে খসড়া তৈরি করেছে, সেখানে এই প্রস্তাব রয়েছে। খসড়াটি এখন ভেটিং-এর জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর কার্যক্রম চলছে। চলতি বছরের শেষ নাগাদ নতুন এই বিধিমালা কার্যকর করতে চায় সরকার।

উল্লেখ্য, সড়ক মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এই ব্যবস্থা চালু রয়েছে। বাংলাদেশেও এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে আলোচনা হয়েছে।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবদুল মালেক জানিয়েছেন, ‘খসড়া প্রস্তাবটি আলোচনার পর চূড়ান্ত করা হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি সেটি ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।’ এটি অনুমোদিত হলে বাংলাদেশের সড়ক ও মহাসড়ক রক্ষণাবেক্ষণ এই তহবিলের আওতায় আসবে। যে বিধিমালাটি প্রস্তাব করা হয়েছে, সেখানে সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের খরচ সড়ক ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে আদায় করা করা, জরিমানা, টোল এবং দপ্তরের সম্পদ ব্যবহারের বিনিময় থেকে সংগ্রহ করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং পরিবহন বিশেষজ্ঞ মো. শামসুল হক বলছেন, উন্নয়নের একটা অংশ হলো সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ। আমাদের দেশে উন্নয়নের অংশ হিসেবে অনেক রাস্তাঘাট তৈরি হচ্ছে, হয়েছে। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কিছুদিন পরেই সেগুলো নষ্ট হয়ে যায়। ফলে এরকম একটি তহবিল অনেক আগে থেকেই দরকার ছিল।

তিনি জানান, এর আগেও এই ধরনের তহবিল গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু কোন মন্ত্রণালয়ের আওতায় বোর্ড থাকবে, এ নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণে শেষ পর্যন্ত কার্যকর হয়নি। ২০১৩ সালে সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ তহবিল বোর্ড আইন গঠন করা হয়। সেই আইনের আওতায় এখন বিধি তৈরি করা হচ্ছে।

সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ তহবিল বিধিমালা ২০২১-এর আয়ের উত্স হিসেবে এক নম্বরে রয়েছে মোটরযানে ব্যবহৃত জ্বালানি থেকে আদায় করা অর্থ। যেমন মোটরযানে পেট্রোল, অকটেন, ডিজেল, সিএনজি, এলএনজি বা অন্যান্য জ্বালানি ব্যবহার করা হলে, সেই প্রতি লিটার বা ঘনমিটারে এক টাকা করে আদায়ের প্রস্তাব করা হয়েছে। কিন্তু এই টাকা কী জ্বালানি তেলের বর্তমান মূলের সঙ্গে যোগ হয়ে বাড়বে নাকি, বর্তমান মূল্য থেকেই সমন্বয় করা হবে জ্বালানি থেকে বাড়তি প্রথম পৃষ্ঠার পর তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। 

অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুল মালেক বলছেন, মন্ত্রিসভায় হয়তো এই প্রস্তাবটি গ্রহণ করা হতে পারে, আবার নাও করা হতে পারে। যদি গ্রহণ করা হয়, তখন ঠিক করা হবে, এই টাকাটা কীভাবে কাটা হবে। প্রসঙ্গত, ২০২০-২০২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের সড়ক ও মহাসড়ক রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ২ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকা। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুসারে, দেশটিতে মোট তালিকাভুক্ত মোটরযান রয়েছে ৪৭ লাখ ৮০ হাজার। 

জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এসব যানে প্রতিদিন ৫২ লাখ লিটারের বেশি জ্বালানি তেল আর ১৩ কোটি ৯০ লাখ ঘনমিটার সিএনজি ব্যবহৃত হয়। লিটার বা ইউনিট প্রতি এক টাকা হিসেবে প্রতিদিন আয় হবে প্রায় সাড়ে ১৪ কোটি টাকা, বছরে প্রায় ৫ হাজার ২৬৩ কোটি টাকা। 

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –