• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

ঝড়-বৃষ্টিতে ছেলে-মেয়েকে নিয়ে ঘরের এক কোণে বসে থাকি

প্রকাশিত: ২৪ মে ২০২২  

বাঁশের নড়বড়ে খুঁটির ওপর টিনের ছাউনি। সামনের ধাপ চালায় প্লাস্টিক দিয়ে কোনো রকমে বৃষ্টির পানি ঠেকিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। বেড়াগুলো বাঁশের চটা দিয়ে তৈরি। তাও আবার ভাঙাচোরা। পেছনের বেড়ার ফাঁক দিয়ে উঁকি দেয় চাঁদ-সূর্য। তাইতো বেড়ার ওপরে পলিথিন দিয়ে রোদ-বৃষ্টি-শীত থেকে বাঁচার চেষ্টা করছেন নুরভানু-মতিয়ার দম্পতি।

নুরভানু বেগম (৪০) ও মতিয়ার রহমান (৬০) দম্পতি কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের অনন্তপুর গ্রামের বাসিন্দা। তাদের ঘরে এক ছেলে এবং ১১ মাস বয়সী এক মেয়ে রয়েছে।

জানা গেছে, মতিয়ার রহমান তিন বছর আগে সড়ক দুর্ঘটনায় পায়ে প্রচণ্ড আঘাত পান। দুর্ঘটনার পর থেকে ঠিকমতো কাজ করতে পারেন না। মাঝে মাঝে স্থানীয় একটি হোটেলে কাজ করেন। সেই সামান্য মজুরিতে টেনেটুনে চলছে অভাব-অনটনের সংসার। ফলে থাকার একমাত্র ঘরটি জরাজীর্ণ হলেও মেরামত করতে পারছেন না। ফলে ঝড়-বৃষ্টির রাতে নির্ঘুম রাত কাটে তাদের। 

কথা হয় মতিয়ার রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমার দুই শতক জমিতে একটি খুপড়ি ঘর রয়েছে। সেই ঘরে কোনো রকম বসবাস করছি। ঘর মেরামতের সামর্থ্য নেই। দুর্ঘটনায় পায়ে আঘাত পাওয়ায় ঠিকমতো কাজও করতে পারি না। এক দিন কাজ করলে পরের দিন বসে থাকি। দিনে ৩০০ টাকা মজুরি পাই। সেই টাকা দিয়ে চাল-ডাল কিনে কোনো রকমে জীবন বাঁচাই। ঘরটা যে মেরামত করব তার উপায় নেই। রাতে ঝড়-বৃষ্টি হলে ঘরের এক কোণে স্ত্রী দুই ছেলে-মেয়েকে নিয়ে বসে থাকি।

মতিয়ার রহমানের স্ত্রী নুরভানু বেগম বলেন, ঝড়-বৃষ্টির সময় আমার ১১ মাস বয়সী মেয়েকে নিয়ে খুব টেনশনে থাকি। বৃষ্টি আসলে ঘরে থাকা যায় না। টাকার অভাবে ঘরটি ঠিক করতে পারি না। তিন বছর ধরে ঘরের এই অবস্থা। সরকার যদি আমাদের একটু সহযোগিতা করতেন, তাহলে ছেলে-মেয়ে নিয়ে একটু ভালো থাকতে পারতাম।

স্থানীয় হারুন অর রশীদ বলেন, মতিয়ার রহমানের একটি মাত্র ঘর। তাও জরাজীর্ণ। অভাবের কারণে ঘরটি মেরামত করতে পারছেন না। ঝড়-বৃষ্টিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই ঘরেই বসবাস করছেন। সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবান লোকজন এগিয়ে এলে পরিবাটির মুখে হাসি ফুটত।

হাতিয়া ইউনিয়নের ৬ নং ওর্য়াডের ইউপি সদস্য আব্দুর রব রানু বলেন, আপাতত ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কোনো বরাদ্দ নেই। তবে আগামী মিটিংয়ে তাদের ঘরের বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে। 

উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিপুল কুমার দেব বলেন, পরিবারটির খোঁজ-খবর নিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘরটি মেরামতের ব্যবস্থা করা হবে।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –