• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

ভাতিজা হত্যায় ১০ হাজার টাকায় লোক ভাড়া করেন চাচা

প্রকাশিত: ৩০ জানুয়ারি ২০২৩  

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে আপন ভাতিজা কামরুল ইসলামকে (৩৫) হত্যার পরিকল্পনা করেন সাইফুল ইসলাম। এ পরিকল্পনা অনুযায়ী পাঁচ হাজার করে মোট ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে দুইজনকে ভাড়া করেন তিনি। সাইফুলের কথামতো হত্যাকারী নজিবুল হক ও দিদার আলী কৌশলে কামরুলকে ডেকে নিয়ে গলায় মাফলার পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন।

সোমবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জেলা পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা এ তথ্য জানান।

এর আগে গত ২৩ জানুয়ারি কামরুল ইসলাম বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। নিখোঁজের তিনদিন পর বুধবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে কামরুলের ছোটভাই কাবুল হোসেন তেঁতুলিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।

বিকেলে দেবনগর ইউনিয়নের ধানশুকা এলাকার একটি চা বাগানের একটি ড্রেনে একটি মরদেহ দেখতে পান স্থানীয় এক নারী। খবর পেয়ে তেঁতুলিয়া মডেল থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে এবং মরদেহটি কামরুলের বলে নিশ্চিত করেন পরিবারের সদস্যরা।

নিহত কামরুল ইসলাম তেঁতুলিয়া উপজেলার তিরনইহাট ইউনিয়নের যুগিগছ এলাকার আব্দুল জব্বারের ছেলে। সাইফুল ইসলাম তার আপন চাচা। চাচা এবং ভাতিজার পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল।

পুলিশ জানায়, গত বুধবার দুপুরে মাছ ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম নিখোঁজের একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। ওইদিন বিকেলে দেবনগর এলাকার একটি চা বাগানের পরিত্যক্ত ড্রেন থেকে কামরুলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে মরদেহ উদ্ধার ও জিডির সূত্র ধরে রাতেই দিদার হোসেনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

গ্রেফতার দিদার পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাইফুল ইসলামের কথায় ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে দুইজন মিলে কামরুলকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। এ ঘটনায় পরদিন বৃহস্পতিবার একটি হত্যা মামলা করা হয়।

এরপর থেকে ঘটনার পরিকল্পনাকারী সাইফুল ইসলাম এবং হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া নজিবুল পলাতক ছিলেন। রোববার রাতে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী সীমান্ত এলাকা থেকে পরিকল্পনাকারী সাইফুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা বলেন, সাধারণ ডায়েরির তিন ঘণ্টার মধ্যে মরদেহ উদ্ধার এবং ওই রাতেই দিদার নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে নিহতের আপন চাচা সাইফুল ইসলামের পরিকল্পনায় তিনি ও নজিবুল নামে আরেকজন মিলে ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ঠাকুরগাঁওয়ের সীমান্ত এলাকা থেকে পরিকল্পনাকারী সাইফুলকেও গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িত তিনজনের মধ্যে নজিবুল হককে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। গ্রেফতার আসামিদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাদের রিমান্ডে নিলে এবং মরদেহের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে আরও বিস্তারিত জানা যাবে।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –